হজমি গুলি শেষ কবে খেয়েছিলাম ভুলে গেছি । সেই টক ঝাল মিষ্টি ছাপিয়ে, দানা মশলার অদ্ভুত সুবাস পেরিয়ে, মন ভালো হয়ে যাওয়া যে অনুভূতির স্মৃতি আজও অনায়াসে ফেলে আসা ছেলেবেলায় নিয়ে যাওয়ার ক্ষমতা রাখে তেমন এলেমদার আইটেম আর বড় একটা দেখিনা । সুমন সরকারের লাকি থারটিন সেই বিস্মৃত স্কুলজীবনের এলোমেলো মজার , কলেজবেলার সেই দেদার উচ্ছন্নগামীতার ভূত হয়ে যেন আচমকা ল্যাং মারলো ।
সপাটে আছাড় খেয়ে পড়ে প্রথমে চূড়ান্ত অপ্রস্তুত হয়ে বোকার মতো দাঁত বের করা, তারপর দৃশ্যটা কল্পনা করে হো হো হাসি এবং অবশ্যই দিনের অবশিষ্ট সময়ে যতবার মনে পড়বে ততবারই নিজের মনে ফিক ফিক – লাকি থার্টিন আপনাকে ছাড়বেনা । গদ্যকারের পর্যবেক্ষণের সাথে উপযুক্ত রসে দীর্ঘজারণ , প্রতিটা লেখাকে একেবারে যাকে বলে সিউড়ির মোরব্বা করে তুলেছে । তথাকথিত শালীনতা ( নাকি গৌড়ীয় ভদ্রতা ? ) বহির্ভুত শব্দের ব্যবহার কোথাও একবারের জন্যেও আরোপিত মনে হয়নি এবং রসিক মাত্রেই জানেন যে সেই বিদ্যেটি বিশেষ আয়াসলব্ধ মুন্সিয়ানা দাবী করে । সুমন সরকারের প্রথম গদ্য সঙ্কলন ‘লাকি থারটিন’ বর্তমান নাগরিক জটিলতাময় ত্রিকোণ বা চতুষ্কোন বিবাহ বহির্ভূত প্রেমসর্বস্ব অপরাপর বাংলা সাহিত্য ও সংস্কৃতির ( অবশ্যই কিছু ব্যতিক্রম ছাড়া ) চর্বিতচর্বণের হাত থেকে পাঠককে নিষ্কৃতি দেয় । লেখকের সমসাময়িক বাংলা কৃষ্টিজগতের পারস্পরিক পৃষ্ঠকন্ডুয়ন প্রতিযোগীতায় নাম লেখানোর কোনও প্রয়োজন আছে বলে মনে হয় না । তাঁর সাহিত্য এমনিই রসোত্তীর্ণ হয়েছে ।
Reviewed by Tanmoy Sarkar …